দীর্ঘদিন ধরে চলা কোনো অ্যানিমে সিরিজের মুভি অ্যাডাপ্টেশন তৈরি করলে, সাধারণত প্রশ্ন থাকে যে মুভির সীমিত সময়ে মূল গল্পের যথাযথ উপস্থাপন করা যাবে কি না। দুর্ভাগ্যবশত, ওভারলর্ড: দ্য সেক্রেড কিংডম এই দিক থেকে সফল হয়নি। মুভিটি গল্পকে তুলে ধরার চেষ্টা করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। ওভারলর্ডের হলি কিংডম আর্কের ঘটনা এবং নতুন চরিত্র “নেয়া বারাজার” ইনট্রোডাকশন এমন কোনো এক্সাইটিং মুহূর্তের জন্ম দিতে পারেনি যা মুভিকে সিনেমা হলে দেখার যোগ্য করে তুলছে।
লম্বা সিরিজের উদাহরণে ডেমন স্লেয়ার: কিমেটসু নো ইয়াইবা – দ্য মুভি: মুগেন ট্রেন এবং ড্রাগন বল সুপার: সুপার হিরোর মতো সফল অ্যানিমে মুভির উদাহরণ থাকলেও, ম্যাডহাউজ “দ্য সেক্রেড কিংডম” মুভিকে যে কেন এই পথে গেলো সেটা ঠিক আমার বুঝে আসে না। লম্বা, ক্লান্তিকর পলিটিক্যাল প্লটিং ও ষড়যন্ত্র নিয়ে তৈরি এই মুভিটি সম্ভবত একটি সিজন বা কয়েকটি বিশেষ পর্বে ভালো মানাতো। ওভারলর্ডের কাহিনি না জানলে দর্শকরা হলি কিংডমের গল্প, নেয়া (Neia)-র প্রচেষ্টা, অ্যাইন্স উল গাউনে (Ainz Ooal Gown)-র সরসারার কিংডম (Sorcerer Kingdom)-এর সহায়তায় দানব জালদাবাথকে পরাস্ত করার পরিকল্পনা নিয়ে বিভ্রান্ত হতে পারেন। জালদাবাথ আসলে অ্যাইন্স (Ainz)-এর জন্য কাজ করে, যে মূলত অ্যানিমে সিরিজের শুরু থেকে কাল্পনিক এমএমওআরপিজি ওয়াইজিজিড্রাসিল (MMORPG YGGDRASIL)-এ আটকে আছে। এসব কিছু মিলিয়ে মুভি দেখার মানসিক পরিস্থিতি তৈরি করা বেশ জটিল। ইনফ্যাক্ট, ওভারলর্ড সম্পর্কে জানলেও দ্য সেক্রেড কিংডম খুব একটা এনজয় করার মতো নয়। গল্পটিকে দুই ঘণ্টার মধ্যে ফিট করানোর প্রয়াসে কখনো কখনো তাড়াহুড়ো দেখা যায়। প্রথমার্ধে এক ফাইনাল ব্যাটেলের ইঙ্গিত দেওয়া হলেও, মূল অ্যাকশন শুরুর আগেই পরিণতির দিকে নিয়ে যাই। আমার কাছে একটা শকিং সিন বাদে, এই মুভিটাকে মূলত দর্শকদের নতুন চরিত্রের সঙ্গে পরিচিত করানোর মাধ্যম হিসেবেই কাজ করেছে বলে মনে হয়েছে।
মুভির বেশিরভাগ সময় নেয়া এবং হলি কিংডমের শক্তিশালী যোদ্ধা রেমেডিওসকে অনুসরণ করতে দেখা যায়। হলি কিংডম ওভারলর্ডের পুরো কাহিনিতে অ্যাইন্সের সৃষ্ট সাম্রাজ্যের আরেকটি বাহন হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নেয়ার পার্সপেক্টিভ এবং তার গ্রোথ একটি ভাল ফাউন্ডেশন তৈরি করে, তবে আসল বিপদের মুখোমুখি না হওয়ায়, শেষের দিকে মুভির প্রথম অংশে তৈরি হওয়া এক্সাইটমেন্ট দ্রুতই হারিয়ে যায়।
ম্যাহাউজ এই মুভিতে ওভারলর্ডের সিগনেটার এবং গোর দৃশ্যগুলি এনেছে, তবে বিগ ব্যাটেলের সময় থ্রিডি অ্যানিমেশনের অদ্ভুত ব্যবহার কিছুটা বেমানান লেগেছে। ইমোমোনাল সিনগুলো তেমন কোনো গভীরতা আনতে বা গল্পে ওপর তেমন কোো প্রভাব ফেলতে পারেনি। থ্রিডি অ্যানিমেশন সীমিত পরিমাণে ব্যবহৃত হলেও, দৃশ্যটি তখনও কিছুটা বিভ্রান্তিকর মনে হয়েছে।
ওভারলর্ড: দ্য সেক্রেড কিংডম অ্যানিমে সিরিজের জন্য প্রাসঙ্গিক হলেও পূর্ণ বিনোদনমূলক মুভি হিসাবে তেমন কিছু দিতে পারেনি, সিরিজের ফুটনোট মনে হয়েছে। মুভিটি ওভারলর্ড ইউনিভার্সে একটি মহাকাব্যিক সিনেমার সম্ভাবনা ছিল, কিন্তু দ্য সেক্রেড কিংডম সেটা পূরণ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যাক্তিগত রেটিং: ৫/১০